ওষুধের দাম বৃদ্ধি
রোগীর আর্থিক দুর্ভোগ কাম্য নয়
কতিপয় কোম্পানির সুপারিশের ভিত্তিতে ২০ জেনেরিকের ৫৩ ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বৃদ্ধি কতটা নৈতিক ও যৌক্তিক, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, দেশের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে সরকারের হাতে। তবে ওষুধের এ মূল্যবৃদ্ধির আগে অন্তত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে মানুষকে তা অবহিত করার নিয়ম। অথচ এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যখন সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা, তখন কোনোরকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই শুধু কোম্পানিগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে ৫৩টি ওষুধের দাম বৃদ্ধি মোটেই কাম্য নয়। বস্তুত এভাবে ওষুধের দাম বৃদ্ধি করায় সাধারণ রোগীরা বিপাকে পড়েছেন, যা অনভিপ্রেত।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, চলতি বছরের মে মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আমাদের দেশেও মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফন ঘটেছে। বস্তুত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির প্রভাব নিু আয়ের মানুষকে চরম দুরবস্থায় নিপতিত করেছে। এমনিতেই করোনার কশাঘাতে চাকরিহারা, বেকার ও আয়-রোজগার কমে যাওয়া জনগোষ্ঠী দৈনন্দিন খরচের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন, এর মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপে বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছে অনেক পরিবার। এ অবস্থায় একসঙ্গে এতগুলো ওষুধের দাম বৃদ্ধি তাদের জীবনে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ দেখা দিয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশীয় কোম্পানিগুলো উৎপাদিত ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে; অথচ এক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভূমিকা মোটেই সন্তোষজনক নয়, বিষয়টি নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। বস্তুত ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হলে রোগী ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উভয়ের স্বার্থই রক্ষা হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড ঐশ্বরিক দায়িত্ব হিসাবে ভাবলে রোগীদের ভোগান্তি অনেক কমে যেত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু যুগ-পরিবর্তনের হাওয়ায় আমাদের মানসিকতা আমূল পালটে গেছে। চিকিৎসা এখন আর সেবাধর্মী কাজ নয়, এটি পরিণত হয়েছে বাণিজ্যের প্রধান উপকরণে, যার প্রকৃষ্ট উদারহরণ হলো ওষুধের দাম নিয়ে এমন অশুভ তৎপরতা। দেশের বিপুলসংখ্যক সাধারণ রোগীর স্বার্থে এ তৎপরতা বন্ধ হওয়া উচিত। আমরা মনে করি, দাম নির্ধারণের বিষয়টি যেহেতু ঔষধ প্রশাসনের আওতাধীন, তাই ওষুধপত্রের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের ব্যাপারে তাদের এমন ভূমিকা থাকা উচিত, যাতে দেশের মানুষ সুলভে ওষুধ পেতে পারে।
ওষুধের দাম বৃদ্ধি
রোগীর আর্থিক দুর্ভোগ কাম্য নয়
সম্পাদকীয়
১৮ জুলাই ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কতিপয় কোম্পানির সুপারিশের ভিত্তিতে ২০ জেনেরিকের ৫৩ ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বৃদ্ধি কতটা নৈতিক ও যৌক্তিক, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, দেশের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে সরকারের হাতে। তবে ওষুধের এ মূল্যবৃদ্ধির আগে অন্তত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে মানুষকে তা অবহিত করার নিয়ম। অথচ এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যখন সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা, তখন কোনোরকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই শুধু কোম্পানিগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে ৫৩টি ওষুধের দাম বৃদ্ধি মোটেই কাম্য নয়। বস্তুত এভাবে ওষুধের দাম বৃদ্ধি করায় সাধারণ রোগীরা বিপাকে পড়েছেন, যা অনভিপ্রেত।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, চলতি বছরের মে মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আমাদের দেশেও মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফন ঘটেছে। বস্তুত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির প্রভাব নিু আয়ের মানুষকে চরম দুরবস্থায় নিপতিত করেছে। এমনিতেই করোনার কশাঘাতে চাকরিহারা, বেকার ও আয়-রোজগার কমে যাওয়া জনগোষ্ঠী দৈনন্দিন খরচের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন, এর মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপে বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছে অনেক পরিবার। এ অবস্থায় একসঙ্গে এতগুলো ওষুধের দাম বৃদ্ধি তাদের জীবনে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ দেখা দিয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশীয় কোম্পানিগুলো উৎপাদিত ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে; অথচ এক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভূমিকা মোটেই সন্তোষজনক নয়, বিষয়টি নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। বস্তুত ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হলে রোগী ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উভয়ের স্বার্থই রক্ষা হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড ঐশ্বরিক দায়িত্ব হিসাবে ভাবলে রোগীদের ভোগান্তি অনেক কমে যেত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু যুগ-পরিবর্তনের হাওয়ায় আমাদের মানসিকতা আমূল পালটে গেছে। চিকিৎসা এখন আর সেবাধর্মী কাজ নয়, এটি পরিণত হয়েছে বাণিজ্যের প্রধান উপকরণে, যার প্রকৃষ্ট উদারহরণ হলো ওষুধের দাম নিয়ে এমন অশুভ তৎপরতা। দেশের বিপুলসংখ্যক সাধারণ রোগীর স্বার্থে এ তৎপরতা বন্ধ হওয়া উচিত। আমরা মনে করি, দাম নির্ধারণের বিষয়টি যেহেতু ঔষধ প্রশাসনের আওতাধীন, তাই ওষুধপত্রের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের ব্যাপারে তাদের এমন ভূমিকা থাকা উচিত, যাতে দেশের মানুষ সুলভে ওষুধ পেতে পারে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2024